অনলাইন ডেস্ক : বগুড়ার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। একমাত্র মেয়ের লেখাপড়াকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ তৈরি হয়। স্বামী বকাঝকা করায় অভিমানে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ট্যাবলেট সেবন করে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানান বগুড়া হাসপাতালের চিকিৎসক।
মৃত চিকিৎসকের নাম রুমানা শারমিন রূম্পা (৪২)। তিনি হাসপাতালটির সহকারী রেজিস্ট্রার (সার্জারি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বগুড়ার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুন রাতে বগুড়া শহরের বৃন্দাবনপাড়ার নিজ বাড়িতে বিপুলসংখ্যক ঘুমের ট্যাবলেট সেবন করে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল বিকেলে হেলিকপ্টারে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
স্থানীয়রা জানান, বৃন্দাবনপাড়ার ‘জমিদার ভিলা’ নামের বাসাটি রূম্পার পৈতৃক নিবাস। তাঁর বাবা প্রয়াত আব্দুল কাইয়ুম খলিফা জমিদার পরিবারের সন্তান। রূম্পা তাঁর বাবার বাড়িতেই চিকিৎসক স্বামী বগুড়া টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (বায়োকেমিস্ট্রি) ডা. সাজেদুল ইসলাম সুজন, বৃদ্ধা মা রওশন আরা বেগম ও একমাত্র কন্যাকে নিয়ে থাকতেন।
তবে রূম্পার মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য গণমাধ্যমকে জানানো হয়নি। তাঁর স্বামী সুজন ঢাকায় লাশের সঙ্গে অবস্থান করছেন। সুজনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ রয়েছে।
রূম্পার চাচাতো ভাই নিশান খলিফার বরাত দিয়ে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শফিক আমিন কাজল বলেন, ওই চিকিৎসক দম্পতির একমাত্র মেয়ের লেখাপড়াকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। রূম্পা তাঁর মেয়েকে শাসন করায় স্বামী-স্ত্রীর বিবাদ সৃষ্টি হয়। সেই অভিমানে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবন করেন রূম্পা।
চিকিৎসক কাজল আরও বলেন, ঢাকা থেকে লাশ সরাসরি বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নেওয়া হবে। সেখানে শুক্রবার বাদ এশা জানাজা শেষে লাশ বাড়িতে নেওয়া হবে। পরদিন সকালে বৃন্দাবনপাড়া ঈদগাহে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হবে।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। সেখানকার চিঠি পেয়েই তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি সদর থানা-পুলিশ জেনেছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ বগুড়ায় পৌঁছাবে। ঘটনার জানার পর তাঁর আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছে পুলিশ।
রাজধানীর ভাটারা থানার ওসি (তদন্ত) মাকারিয়া দাস বলেন, ‘এভারকেয়ার হাসপাতাল আমাদের থানায় হওয়ায় মরদেহের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন করেছি। তবে মামলাসহ সার্বিক বিষয় দেখবে বগুড়া সদর থানা।’