ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ডিবি পুলিশের এক কনস্টেবলের ওপর হামলার ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এই মামলায় ওই দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল রোববার (৯ জুন) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বোয়ালমারী বাজার এলাকার নাট মন্দিরের সামনের স্টেশন রোডে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মুর্তজা আলী তমাল (৩১) ও সহ-সভাপতি মো. রনি মাহমুদ (২৮)। তারা বোয়ালমারী পৌর শহরের বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল রোববার ছিল বোয়ালমারীর সাপ্তাহিক হাটের দিন। ফলে নাট মন্দিরের সামনে স্টেশন রোডে প্রচুর যানজট ছিল। ওই যানজটের মধ্যে ফরিদপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি মাইক্রোবাস যাচ্ছিল। ওই গাড়ির পেছনে ছাত্রলীগের দুই নেতা মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। যানজটের কারণে ডিবি পুলিশের গাড়ি সামনের দিকে এগুতে পারছিল না। কিন্তু পেছন থেকে ছাত্রলীগ নেতাদের বহনকারী মোটরসাইকেল থেকে বার বার হর্ন বাজানো হচ্ছিল। এ অবস্থায় ডিবির গাড়ি থেকে কনস্টেবল মির্জা গোলাম গাউস নেমে ওই দুই মোটরসাইকেল আরোহীকে বলেন, ‘দেখছেন যানজটের কারণে গাড়ি সামনে এগুতে পারছে না, আপনারা বার বার হর্ন দিচ্ছেন কেন।’
এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতারা ওই কনস্টেবলকে বলেন ‘তুই ক্যাডা’? এ কথা বলেই ওই কনস্টেবলকে গালাগালি ও পরে মারপিট করেন তারা।
এতে কনস্টেবল মির্জা গোলাম গাউস আহত হন। তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. হান্নান বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় সোমবার (১০ জুন) সকালে মামলা দায়ের করেন। ওই দুই নেতাকে বোয়ালমারী উপজেলা সদর থেকে গ্রেপ্তার করে সকালে বোয়ালমারী থেকে ফরিদপুর ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ মতিন বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া ওই দুইজনকে দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকী বলেন, গরমে সবাই নাকাল অবস্থার মধ্যে ছিল। এর মধ্যে গতকাল যখন এ ঘটনা ঘটে তখন ঘটনাস্থলে ব্যাপক যানজট ছিল। এ কারণে পুলিশ ও ছাত্রলীগের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি এতদূর না গড়িয়ে মীমাংসা হয়ে গেলে ভালো হতো। ভুল বুঝাবুঝির এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। এটা ছাত্রসমাজের কাছে ভালো বার্তা দিলো না।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ বলেন, আমি রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এখানে আসলে ভুল কারোরই না। পুরো ব্যাপারটা ভুল বোঝাবুঝি থেকে এতদূর গড়িয়েছে। তবুও যেহেতু একটা ঘটনা সামনে আসছে আমরা বিষয়টির দিকে নজর রাখছি।