অনলাইন ডেস্ক : ভারতের চণ্ডিগড় বিমানবন্দরে বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াতকে চড় মেরে আলোচনায় কুলবিন্দর কৌর নামের এক নারী। ঘটনার পর একটি ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে কঙ্গনার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা গেছে তাকে। কী কারণে কঙ্গনাকে চড় মারলেন তিনি, কেনই বা এত ক্ষোভ? লোকসভা নির্বাচনে সদ্য বিজয়ী বিজেপির এই সংসদ সদস্যকে চড় মারার সাহস দেখানো কে এই কুলবিন্দর কৌর?
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর জানিয়েছে, ২০২০ সালের কৃষক আন্দোলন নিয়ে কঙ্গনার করা মন্তব্যের বিষয়ে বেশ ক্ষুব্ধ ছিলেন কুলবিন্দর। সে কারণে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) চণ্ডিগড় বিমানবন্দরে কঙ্গনাকে হাতের নাগালে পেয়েই এতদিনের পুষে রাখা ক্ষোভ ঝাড়েন তিনি।
এদিকে, চড়কাণ্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে কুলবিন্দরকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, ‘আমার মা ছিলেন ওখানে’।
জানা গেছে, দিল্লিজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করা কৃষক আন্দোলনে ১০০ টাকার বিনিময়ে অংশ নিয়েছিলেন নারীরা, সে সময় এমনই বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন কঙ্গনা। সেই বক্তব্যের জবাব দিয়ে কুলবিন্দর জানান যে, তার মাও ছিলেন সেই আন্দোলনে।
তাকে বলতে শোনা যায়, ‘কঙ্গনা বলেন নারীরা ১০০-১০০ টাকায় বসেছিলেন কৃষক আন্দোলনে, উনি গিয়ে বসবেন ওখানে? আমার মা বসেছিলেন ওখানে, যখন উনি ওই মন্তব্য করছিলেন।’
কুলবিন্দর এটিও স্পষ্ট করে দেন যে, কঙ্গনাকে ‘কৃষকদের অসম্মান’ করার জবাব দিয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, কুলবিন্দর সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (সিআইএসএফ) একজন নারী কনস্টেবল। এই ঘটনার পর তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া, এই ঘটনার তদন্তের জন্য বিমানবন্দরে নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্বপ্রাপ্তদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সিআইএসএফ কনস্টেবল কুলবিন্দর কৃষক পরিবারের সন্তান। ২০০৯ সালে তিনি সিআইএসএফে যোগ দেন। ২০২১ সাল থেকে চণ্ডিগড় বিমানবন্দরে অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি গ্রুপ ফোর্সে রয়েছেন। এখন পর্যন্ত বাহিনীতে তার বিরুদ্ধে কোনও সতর্কতামূলক তদন্ত বা শাস্তি হয়নি। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তার স্বামীও একই বিমানবন্দরে কর্মরত।
এদিকে, নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে কঙ্গনা জানিয়েছেন, বর্তমানে তিনি সুরক্ষিত রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে ভারতজুড়ে একজোট হয়ে আন্দোলন গড়ে তোলেন কৃষকরা। এতে উত্তাল হয় দিল্লির পরিস্থিতি। সেই সময় ওই আন্দোলনে বসে থাকা এক বৃদ্ধার ছবি পোস্ট করে কঙ্গনা লেখেন, ‘১০০ টাকাতেই লভ্য’। বিপুল জনরোষের মুখে সেই পোস্ট মুছতে বাধ্য হন অভিনেত্রী।
চড়কাণ্ডের পরও দুই দলে বিভক্ত নেটিজেনরা। একাংশের মতে, আদর্শের পার্থক্য থাকলেও কারও গায়ে হাত তোলা ঠিক নয়। অন্যদিকে, আরেকদল বলছে, ‘ওই নারী কনস্টেবল ঠিক কাজই করেছেন।’