লিবিয়ায় অপহরণের শিকার নাটোরের চার যুবক, ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

নাটোর প্রতিনিধি: লিবিয়ায় জিম্মি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চার যুবক। তাদের অপহরণের পর ওই চার যুবককের পরিবারের কাছ থেকে চাওয়া হচ্ছে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ। এমনকি জিম্মি যুবকদের শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পাঠানো হচ্ছে পরিবারের কাছে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে তাদের হত্যার হুমকিও দেয়া হয়। এমন খবরে জিম্মি যুবকদের বাড়িতে চলছে স্বজনদের আহাজারি।

জিম্মি ৪ যুবকরা হলেন- নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের শাজাহান প্রামাণিকের ছেলে সোহান প্রামাণিক (২০), তয়জাল শেখের ছেলে সাগর হোসেন (২৪), মৃত শুকুর আলীর ছেলে নাজিম আলী (৩২) এবং ইনামুল ইসলামের ছেলে বিদ্যুৎ হোসেন (২৬)।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে দুই বছর আগে নিজেদের শেষ সম্বল জমি, গবাদি পশু বিক্রি করে এবং বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে পাঠান তাদের পরিবার। নিজ দেশ ছেড়ে প্রবাস জীবনে পাড়ি দেন তারা। সেখানে শ্রমিকের কাজ শুরু করেন। প্রতিমাসে ১৫/২০ হাজার টাকা করে দেশে পরিবারকে পাঠান তারা। কিন্তু গত ২ জুন লিবিয়া থেকে চার প্রবাসীর পরিবারের কাছে ইমো নম্বরে কল আসে।

আরও পড়ুনঃ   হেলিকপ্টারে চড়ে বউ আনলেন পোশাক শ্রমিক হজরত আলী

রিসিভ করতেই বাংলা ভাষায় চার যুবককে অপহরণের কথা জানিয়ে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেন অপহরণকারীরা। এ মুক্তিপণ না দেওয়া হলে চারজনকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। এ খবরের পর থেকে তাদের পরিবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। জিম্মিদের শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের ইমো নাম্বারে পাঠায়। টাকা দিতে না পারলে নির্যাতনের মাত্রা প্রতিদিন বাড়তে থাকবে বলে জানান।

জিম্মির কথা স্বীকার করে সোহানের বাবা শাজাহান প্রামাণিক বলেন, কয়েক দিন আগে তার ইমো নম্বরে লিবিয়া থেকে কল আসে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে ছেলে সোহান বলে, আমাকে অপহরণ করে নিয়ে আসছে। ১০ লাখ টাকা দিতে হবে, না দিলে মেরে ফেলবে আমাকে।’ সোহানকে একটি কক্ষে বেঁধে রেখে মারধর করে ভিডিও পাঠায় আমাদের কাছে। ৪ লাখ টাকা খরচে লিবিয়ায় পাঠিয়েছিলাম। এখনও সেই ঋণ শোধ করতে পারেননি। মুক্তিপণের টাকা কোথায় থেকে দেবো?

আরও পড়ুনঃ   ফরিদপুরে মাদক মামলায় নারীসহ তিনজনের যাবজ্জীবন

জিম্মি আরেক যুবক নাজিমের স্ত্রী নাদিরা বেগম বলেন, সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরানোর জন্য স্বামীকে ৪/৫ লাখ টাকা ঋণ করে লিবিয়া পাঠায়। সেই ঋণেরর টাকাই শোধ করতে পারিনি। এখন কী করে মুক্তিপণের এত টাকা জোগার করবো!
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উজ্জ্বল হোসেন জানান, লিবিয়ায় অপহরণের স্বীকার চার যুবকের কথা শুনে আমরা তাদের বাড়িতে যাই। বাড়িতে স্বজনরা আহাজারি করছেন। ইতিমধ্য আমরা বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।