অনলাইন ডেস্ক : যশোরের অভয়নগরে পুলিশ হেফাজতে আফরোজা বেগম (৪০) নামের এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ওই নারীর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, নারীকে পুলিশ সদস্যরা নির্যাতন করায় তার মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে পুলিশ দাবি করেছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (২ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে আফরোজা বেগমের মৃত্যু হয়। নিহত আফরোজা বেগম অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের জলিল মোল্লার স্ত্রী।
আফরোজা বেগমের ছেলে মুন্না মোল্লা (১৬) জানায়, স্থানীয় একটি মহলের ইন্ধনে অভয়নগর থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সিলন আলী, এএসআই শামসুল হক শনিবার (১ জুন) দিবাগত রাত ১২টার দিকে তাদের বাড়িতে আসে। পরে ইয়াবা ট্যাবলেট দেখিয়ে তার মাকে আটক দেখায়। এ সময় সিভিল পোশাকে থাকা দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ আরও এক নারী পুলিশ তার মাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে মারধর করে। পরে রাত ১টার দিকে থানায় নিয়ে যায়।
রোববার সকালে থানায় গিয়ে দেখে তার মা খুব অসুস্থ। পুলিশ তার মাকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা কয়েকটি টেস্ট দিলেও পুলিশ সদস্যরা সেগুলো করতে না দিয়ে ফের থানায় নিয়ে আসে। থানায় আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মা আফরোজা বেগমের মৃত্যু হয়।
আফরোজা বেগমের স্বামী জলিল মোল্লা বলেন, আমি আগে নেশা করতাম। এখন ভালো হয়ে গেছি। এখন অটোভ্যান চালায়। আমি আর আমার বড় ছেলে অটোভ্যান চালিয়ে একটা বাড়ি করেছি। এই বাড়ি করার সময় স্থানীয় তরিক শেখসহ আরও কয়েকজন আমাদের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় তারা আমাদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি দেয়। গতকাল তরিক শেখও পুলিশের সঙ্গে আমাদের বাড়িতে আসে।
তিনি আরও বলেন, তরিক শেখ সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। তার নামে অভয়নগর থানায় বিভিন্ন মামলা রয়েছে। এলাকায় ত্রাস হিসেবে পরিচিত।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভয়নগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল শনিবার রাত দেড়টার দিকে মাদকসহ ওই নারীকে আটক করা হয়। তাকে কোনো ধরনের নির্যাতন করা হয়নি। সকালে তিনি অসুস্থ বোধ করলে স্বজনদের উপস্থিতিতেই তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। তার উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ থাকায় পরে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু পথে তিনি মারা যান।
তিনি আরও বলেন, স্বজন হারিয়ে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে অনেক কথাই বলতে পারে। প্রকৃতপক্ষে পুলিশের কোনো সদস্য ওই নারীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করেনি।