অনলাইন ডেস্ক : চিকিৎসার জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে গিয়ে খুন হয়েছেন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। তবে তার লাশ এখনও উদ্ধার করা যায়নি। টানা কয়েকদিন ধরে নিরলস তল্লাশির পর কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেন্সের সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহের খণ্ডিতাংশ উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে এই দেহাংশ আনোয়ারুল আজিম আনারের কিনা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এমন অবস্থায় এমপি আনারের মরদেহের খোঁজ পেতে এবার ভারতীয় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সহায়তা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার (২ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে কলকাতার একাধিক সংবাদমাধ্যম।
সংবাদমাধ্যম বলছে, খালের নোংরা পানি থেকে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমের মরদেহের হাড় এবং মাথার খুলি উদ্ধার করতে এবার ভারতীয় নৌবাহিনী এবং উপকূলরক্ষী বাহিনীর (কোস্টগার্ড) সাহায্য নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি।
ওই খুনের ঘটনায় ধৃত জিহাদ হাওলাদারের দাবি ছিল, আজিমের মরদেহের হাড় এবং মাথার অংশ টুকরো টুকরো করে ভাঙড়ের পোলেরহাট থানা এলাকার কৃষ্ণমাটি এলাকার বাগজোলা খালে ফেলা হয়েছে। সেখানে গত সাত দিন ধরে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালিয়েও কিছু পাওয়া যায়নি।
মূলত ওই খালের পানি নোংরা, ঘোলা এবং ময়লা-মাটিতে ভর্তি। উন্নততর প্রযুক্তি ব্যবহার করলে ওই হাড় বা মাথার খুলির অংশ উদ্ধার হতে পারে বলে মনে করছেন সিআইডির কর্মকর্তারা।
সিআইডির এক কর্মকর্তা জানান, ওই উন্নততর প্রযুক্তি রয়েছে নৌবাহিনী এবং উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাছে। তাই তাদের ডুবুরি দিয়ে তল্লাশি চালালে এমপি আনারের দেহের ওই অংশ উদ্ধার করা যেতে পারে। এটা ধরে নিয়েই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। তবে তা ফলপ্রসু হবে কি না তা পরবর্তী সময়ে বোঝা যাবে।
ইতিমধ্যে কলকাতা নিউটাউনের বিলাসবহুল ওই আবাসিক কমপ্লেক্সের সেফটি ট্যাংক থেকে যে মাংসপিণ্ড উদ্ধার হয়েছে, সেগুলো ওই সংসদ সদস্যের কিনা, তা জানতে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। মাংসপিণ্ড উদ্ধার হলেও আজিমের দেহের হাড়় কিংবা মাথার অংশ এখনও উদ্ধার করতে পারেনি সিআইডি।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ওই ফরেনসিক রিপোর্ট আসবে। তা পজিটিভ হলে এমপি আনারের মেয়ে কিংবা তার কোনও আত্মীয়ের সঙ্গে ডিএনএ প্রোফাইল ম্যাচিংয়ের জন্য পাঠানো হবে ল্যাবরেটরিতে। প্রায় একইসঙ্গে হাড় এবং মাথার খুলি উদ্ধার করা গেলে তদন্তের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের মামলায় অভিযুক্ত সিয়াম হোসেন নেপালে আটক হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে। অবশ্য পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির পক্ষ থেকে ওই খবরের সত্যতা স্বীকার করা হয়নি। যদিও সিয়ামকে হাতে পেতে সব রকম চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যান এমপি আনার। ১৩ মে বন্ধু গোপালের বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। তিনি এসএমএসে বলছিলেন দিল্লি যাচ্ছেন এবং সেখানে পৌঁছে তাকে ফোন করবেন। পরে তার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন জানিয়ে ফোন না দিতে বলেন।
পরে ১৮ মে ভারতে নিখোঁজের জিডি করা হয়। ২২ মে ভারতের কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে বলে জানায় কলকাতার সিআইডি।