সংবাদ বিজ্ঞপ্তি : ৩১ মে বিশ্ব তামাক দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে রাজশাহী বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন কর্তৃক বিভাগীয় কার্যালয়, রাজশাহী-এ বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। ‘তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ প্রতিহত করি, শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করি’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আলোচকরা তামাক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোচনা করেন।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের চারটা ভিত্তি হলো- স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সমাজ ও স্মার্ট অর্থনীতি; কোনো স্মার্টের সাথেই কিন্তু ধূমপান জিনিসটি যায় না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ২০৪০ সালের মধ্যেই আমরা ধূমপান থেকে মুক্তি পেতে চাই। মুক্তিলাভের জন্য আমাদের সমন্বিত পদক্ষেপে অগ্রসর হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে পৃথিবীতে ১২৫ টি দেশে প্রায় ৪০ লক্ষ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়। বেশিরভাগ দরিদ্র দেশগুলোতেই এর চাষাবাদ হচ্ছে। তামাক পাতা শুকানোর জন্য বনভূমি উজাড় করে কাঠ সংগ্রহ করা হয়। তামাক চাষে বাংলাদেশ বিশে^র ২০৪টি দেশের মধ্যে ১৩তম উল্লেখ করে তিনি এই অবস্থার বিভিন্ন নেতিবাচক দিক তুলে ধরেন। তামাক কোম্পানিগুলো বিজ্ঞাপন, চলচ্চিত্র ও অন্যান্য প্রচার মাধ্যমে তামাক সেবনকে তথাকথিত স্মার্টনেস হিসেবে দেখানোর যে বিপনন কৌশল অবলম্বন করছেন তা অবিলম্বে বন্ধ করার কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রশাসন এসব প্রতিরোধে বিদ্যমান ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫’- এর আওতায় তামাক কোম্পানির অপতৎপরতা ও কূটকৌশল রোধে বিভিন্ন অভিযান ও কর্মতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। এ সময় উপস্থিত বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে মতবিনিময় করেন তারা কেন ও কীভাবে মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ছে সে বিষয়ে তাদের অভিমত নেন এবং এর থেকে পরিত্রাণের বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে পরামর্শ দেন।
হুমায়ূন কবীর বলেন, জীবনে হতাশা ও চ্যালেঞ্জ থাকতেই পারে। তামাক সেবনকে হতাশা নিরাময়ের উপায় হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশে তোমরাই একসময় নেতৃত্ব দেবে। সরকারি চাকুরিতে প্রবেশকালে প্রত্যেক চাকুরিপ্রার্থীকে ডোপটেস্ট করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়াও চাকুরিরত কর্মচারীদের এসিআর প্রতিবেদনে ডোপটেস্ট করানোর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকেও যেকোনো ধরণের তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য সেবনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তা উল্লেখ করে সবাইকে এ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান বিভাগীয় কমিশনার।
আলোচনা সভার পূর্বে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মহিনুল হাসান এর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক মোঃ পারভেজ রায়হান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আনোয়ার হোসেন ও আবু সালেহ আশরাফুল আলম, আরএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (বোয়ালিয়া) বিভূতি ভূষন ব্যানার্জী।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ও নফসের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দ।