ছেলের সঙ্গে এসএসসি পাস করলেন ইউপি সদস্য দুই বোন

স্টাফ রিপোর্টার : নাটোরের নলডাঙ্গায় মা, ছেলে ও খালা একসঙ্গে এসএসসি পাস করেছেন। মা নাসিমা বেগম জিপিএ-৩.৬৪, ছেলে সোহান ৩.৯৬ ও খালা হালিমা বেগম ৩.৮৯ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

রোববার (১২ মে) এসএসসির ফল প্রকাশের পর এমন সাফল্যে পরিবার-পরিজনসহ এলাকাবাসীর প্রশংসায় ভাসছেন দুই নারী জনপ্রতিনিধি।
জানা গেছে, ছেলে সোহান ও মা নাসিমা বেগম উপজেলার বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়নের মির্জাপুর দিয়ারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। খালা হালিমা বেগম একই ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর দিঘা গ্রামের আব্দর রাজ্জাকের স্ত্রী। মা নাসিমা বেগম বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান সংরক্ষিত ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড ও খালা হালিমা বেগম একই ইউনিয়নের ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য। নাসিমা বেগম ও হালিমা বেগম কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ওমরগাড়ি ফাজিল মাদ্রাসার ভোকেশনাল শাখা থেকে এবং একই শিক্ষাবর্ষে ছেলে সোহান নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে এসএসসি (সমমান) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পরীক্ষায় মা নাসিমা বেগম জিপিএ-৩.৬৪, ছেলে সোহান ৩.৯৬ ও খালা হালিমা ৩.৮৯ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

আরও পড়ুনঃ   নগরীতে অপারেশন ডেভিল হান্টে ২ জনসহ অন্যান্য অভিযোগে গ্রেপ্তার ৬

মা ও খালার সঙ্গে এসএসসি (সমমান) পরীক্ষায় পাস করে উচ্ছ্বসিত সোহান। সে বলে, আমার সঙ্গে আমার মা ও খালা এসএসসি পাস করায় সত্যিই আমি অনেক খুশি। অনেকেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।

মা নাসিমা বেগম বলেন, আমার খুব ইচ্ছা ছিল এসএসসি পাস করার। কিন্ত মা-বাবার সংসারে সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। পরে আমি আমার ছেলের পরামর্শে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর রাজশাহীর পুঠিয়া ওমরগাড়ি ভোকেশনাল মাদ্রাসায় ভর্তি হই। এসএসসি (সমমান) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আজ আমি পাস করেছি, তাই আমি আন্দদিত।

খালা হালিমা বেগম বলেন, আমি আমার স্বামীর পরামর্শে বোন নাসিমার সঙ্গে ওমরগাড়ি মাদ্রাসার ভোকেশনাল শাখায় ভর্তি হই। দুই বোন এক সঙ্গে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাস করে আমরা অনেক খুশি। তিনি বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধি হওয়ায় অনেক সময় শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য বিড়ম্বনায় পড়তে হতো। সত্যি কথা বলতে লেখাপড়ার কোনো বিকল্প নেই। পাস করার ফলে আমাদের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে।

আরও পড়ুনঃ   জান্নাতুল মাওয়া জামে মসজিদ ও মাদ্রাসার উদ্যোগে তাফসীরুল কুরআন মাহফিল

এ বিষয়ে নাটোর জেলা সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য বুলবুল আহমেদ বলেন, দুই নারী জনপ্রতিনিধি আমাদের সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাদের এমন কৃতিত্বকে সবার সম্মান করা উচিত।

উল্লেখ্য,২০২২ সালে উপজেলার বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দুই বোন নাসিমা বেগম ও হালিমা বেগম ও নাটোরের ছাতনি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এক বোনসহ তিন বোন একসঙ্গে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে নির্বাচিত হয়ে সারাদেশে আলোচনায় ছিলেন।