মর্গে মায়ের মরদেহ, শিশুর পরিচয় খুঁজছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ

অনলাইন ডেস্ক : ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে দুই দিন ধরে পড়ে আছে অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ। হাসপাতালে ভর্তি দুই বছরের শিশু অনবরত কেঁদেই চলছে। তাদের কারো পরিচয় মেলেনি এখনো। শিশুটির দেখাশোনা করছে ওয়ার্ডের লোকজন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, নাম-পরিচয়হীন শিশুটি দুই দিন ধরে ভর্তি আছে শিশু ওয়ার্ডে। আত্মীয়-স্বজনকে খোঁজা হচ্ছে।

শনিবার (১১ মে) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, অনবরত কেঁদে যাচ্ছে দুই বছর বয়সী ছোট্ট অবুঝ শিশুটি। কোলে নিয়ে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন রাসেল নামে এক ব্যক্তি। গরম পানিতে পুড়ে যাওয়া তার শিশুকে নিয়ে ওই ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়ার পর শিশুটি তার নজরে আসে। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স এবং রোগীর স্বজনরা মিলে দেখাশোনা করছেন শিশুটির। এখানে আসার পর থেকে অজ্ঞাত পরিচয় শিশুটির দেখাশোনা করছেন তিনি। খাবার ও জামা কাপড় কিনে দেওয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশুটির পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করছেন রাসেল।

আরও পড়ুনঃ   প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের দিনব্যাপী কর্মশালা

রাসেল জানান, শুক্রবার দুপুরে নিজের শিশু সন্তানকে নিয়ে এই ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়ার পর জানতে পারেন অজ্ঞাত পরিচয় এক শিশু এখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারপর থেকে তিনি খেয়াল রাখছেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশুটির পরিচয় জানতে চেয়ে পোস্ট করেছেন তিনি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার ভোররাতে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে অজ্ঞাত এক নারী ও শিশুকে গুরুতর আহত অবস্থায় নিয়ে আসে কয়েকজন ব্যক্তি। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হলে পরদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারীর মৃত্যু হয়। নাম পরিচয় না পাওয়ায় মরদেহ রাখা হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। এদিকে শিশুটি ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার মাথায় এবং হাতে আঘাত রয়েছে। তবে নারী ও শিশু কীভাবে বা কোথায় আহত হয়েছেন তা সঠিক জানেন না কেউ। যারা হাসপাতালে দিয়ে গেছেন তাদের ভাষ্য মতে, ভালুকা উপজেলার স্কয়ার মাস্টারবাড়ী এলাকায় সড়কের পাশে আহত অবস্থায় পাওয়া যায় নারী ও শিশুকে।

আরও পড়ুনঃ   দুর্ঘটনায় এসআই ছেলে নিহত হওয়ার খবরে বাবার মৃত্যু

শিশু ওয়ার্ডে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ফারজানা কাওছার বলেন, শিশুটির মাথায় আঘাত থাকলেও, বড় ধরনের কোনো ঝুঁকি নেই। হাতে হালকা ইনজুরি আছে। তবে পাশে বাবা-মা না থাকায় শিশুটি অনবরত কাঁদছে।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মো. জাকিউল ইসলাম জানান, ওই নারীর মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। এখনো তাদের পরিচয় জানা যায়নি। শিশুটি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছে। আমরা তার দেখাশোনা করছি। পুলিশ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মা ও শিশুটির পরিচয় শনাক্তে কাজ করছে।