স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে ছেলেকে কুমির ভর্তি নদীতে ফেলল মা, মিলল লাশ

অনলাইন ডেস্ক : স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে নিজের ছেলেকে কুমির ভর্তি নদীতে ফেলে দিয়েছেন এক মা। ৬ বছর বয়সী ওই ছেলে ছিল প্রতিবন্ধী এবং এই ঘটনার পরদিন কুমির ভর্তি ওই নদী থেকে তার অর্ধ-খাওয়া ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এই ঘটনায় অভিযুক্ত ওই স্বামী-স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকে।

সোমবার (৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বামীর সঙ্গে ঝগড়ার পর কর্ণাটকে এক নারী তার ছয় বছরের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছেলেকে কুমির-ভর্তি খালে ফেলে দিয়েছেন। এই ঘটনার একদিন পরে শিশুটির অর্ধ-খাওয়া মরদেহ পাওয়া যায় বলে সোমবার পুলিশ জানিয়েছে।

অভিযুক্ত ওই নারীর নাম সাবিত্রী। আর তার স্বামী রবি কুমার (৩৬)। ৩২ বছর বয়সী সাবিত্রী অন্যের বাড়িতে সাহায্যকারী হিসাবে কাজ করেন। অন্যদিকে কুমির-ভর্তি নদীতে ফেলে দেওয়ার পর প্রাণ হারানো ওই শিশুর নাম বিনোদ।

আরও পড়ুনঃ   গাজায় আমেরিকান অস্ত্র ব্যবহারে ইসরায়েলের সমালোচনা যুক্তরাষ্ট্রের

এনডিটিভি বলছে, ৩২ বছর বয়সী সাবিত্রী প্রায়শই তার স্বামী রবি কুমারের সাথে তাদের ছেলে বিনোদকে নিয়ে মারামারি করতেন। ৬ বছর বয়সী বিনোদ ছিল জন্মগতভাবে বধির এবং মূক। এছাড়া সাবিত্রী-রবি কুমার দম্পতির দুই বছর বয়সী আরও এক ছেলে সন্তান রয়েছে।

সাবিত্রী পুলিশকে বলেছেন, তার স্বামী রবি কুমার রাজমিস্ত্রির কাজ করে। ছেলেকে নিয়ে রবি প্রায়ই তাকে কটূক্তি করত এবং তাদের ছেলেকে খালে ছুড়ে ফেলে মেরে ফেলতে বলত।

তিনি বলেন, ‘(এই ঘটনার জন্য) আমার স্বামী দায়ী। তিনি প্রায়ই বলতেন- ছেলেকে মরতে দাও এবং সে কেবল খেতেই পারে। আমার স্বামী যদি এভাবে বলতেই থাকে, আমার ছেলে আর কতটা অত্যাচার সহ্য করবে? আমার দুঃখের কথা জানাতে আমি কোথায় যাব?’

আরও পড়ুনঃ   ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট

সংবাদমাধ্যম বলছে, ছেলেকে নিয়ে শনিবার বিকেলে আবার তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। শনিবারের সেই লড়াইয়ের পর সাবিত্রী তার ছেলেকে উত্তর কন্নড় জেলার খালে নিয়ে গিয়ে কুমির-ভর্তি পানিতে ফেলে দেন।

পরে স্থানীয় লোকেরা পুলিশকে খবর দেয় এবং এর পরপরই দমকল কর্মীদের নিয়ে সেখানে তল্লাশি শুরু করা হয়। তবে রাতভর তল্লাশি চললেও কিছু পাওয়া যায়নি এবং পরদিন সকালে শিশুটির লাশ পাওয়া যায়।

তবে মরদেহ ছিল অর্ধ-খাওয়া ও ক্ষত-বিক্ষত। অর্থাৎ শিশুটির মরদেহের ডান হাত ছিল না এবং সারা শরীরে ছিল কামড়ের দাগ। শিশুটি যে কুমিরের কামড়েই প্রাণ হারিয়েছে এতেই সেটির ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

এনডিটিভি বলছে, এই ঘটনায় রবি ও সাবিত্রী দুজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।