অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির কার্যক্রম দীর্ঘায়িত করার মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা করছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এজন্য ঘটনার দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে বিশ্ববিদ্যালয়কে ৩ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই আলটিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা। প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী রাফিজ খান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত মার্চে তদন্ত কমিটি গঠন করে দুই সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু দুই মাস অতিক্রান্ত হয়েছে এখন পর্যন্ত তদন্তের কোনো অগ্রগতি আমরা দেখতে পাচ্ছি না। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অন্য দুইটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা করতে পারেনি।
তদন্ত প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করার মাধ্যমে ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিশেষ কোনো মহল বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে অথবা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা কমে গেলে লঘুদণ্ড দিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনদিনের আলটিমেটাম দিয়ে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে এই ঘটনায় অগ্রগতি আমাদেরকে জানাতে হবে। দৃশ্যমান কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি পরিলক্ষিত না হলে নিপীড়িত শিক্ষার্থীর ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে আমরা বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবারও কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।
উল্লেখ্য, গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন বিভাগেরই একজন নারী শিক্ষার্থী। ওই নারী শিক্ষার্থী প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়ে মানববন্ধন করে বিভাগের সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। পরে ১২ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক নাদিরের অফিসকক্ষ ও ক্লাসরুমে তালা দেয় শিক্ষার্থীরা। তখন শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিলে অধ্যাপক নাদিরকে ৩ মাসের বাধ্যতামূলক ছুটি দেয় প্রশাসন এবং তদন্ত কমিটি গঠন করে দুই সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের কথা বলে।