অনলাইন ডেস্ক : ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বুধবার (১ মে) সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার পরবর্তী এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে মিল্টন সমাদ্দারকে রিমান্ডের পাশাপাশি প্রয়োজনে তার স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
বুধবার (১ মে) রাতে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
ডিবি হারুন বলেন, স্বজনহীন, নামপরিচয়হীন মরদেহ দাফন করতে গেলে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার প্রয়োজন হয় এবং আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তিনি এসব মানতেন না। এ ধরনের ঘটনাগুলো মিডিয়াতে আসা এবং বিভিন্ন প্রশ্ন আসায় আমরা কিন্তু তাকে গ্রেপ্তার করেছি। তিনি কেন এই আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেন না এবং কেন রাতের অন্ধকারে মরদেহগুলো দাফন করলেন এগুলো তদন্তে নিয়ে আসব। এছাড়া মৃত ভুক্তভোগীর স্বজনরা এগুলো জানতে গেলে তিনি কেন তাদের পেটালেন সেগুলোও তদন্তে নিয়ে আসব।
আমরা জানতে পেরেছি তার আশ্রম থেকে তার স্ত্রী সমস্ত ডকুমেন্ট সরিয়ে নিচ্ছেন। এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ থাকবে এমন প্রশ্ন উত্তরে তিনি বলেন, আমরা সবদিকের খবর নিচ্ছি। প্রয়োজনে তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কাগজগুলোও আমরা উদ্ধার করব। তার বিরুদ্ধে একাধিক যে অভিযোগ আছে সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে মামলা রুজু হবে। এরপর আমরা তাকে রিমান্ডে নেব। রিমান্ডে নেবার পরে আপনারা যে প্রশ্নগুলো জানতে চেয়েছেন, আমাদের কাছে যে অভিযোগ আছে সেগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হবে। সে যদি সত্যিকারভাবে এগুলো করে থাকে তবে সেটা জঘন্য অপরাধ। তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, আমরা মামলার কপি হাতে পেয়েছি। তার বিরুদ্ধে একদিকে মানবপাচার, অন্যদিকে বাচ্চা শিশুদের উপর হামলা এবং আত্মীয়-স্বজন গেলে তাদের মারপিট এবং বিভিন্ন জায়গা গুলোতে নিজের টর্চার সেল বানিয়েছেন সবকিছুই তার মামলার মধ্যে আসবে। আমরা সবকিছুই মামলার মধ্যে আনব। সবকিছুই তদন্তের মধ্যে আসবে।
মিল্টন যেহেতু গ্রেপ্তার হয়েছে সেহেতু তার আশ্রমে যারা রয়েছে তাদের দেখভালের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। মিল্টনের তো আর এগুলো দেখভাল করার কথা না। তার লোকজনের মাধ্যমে সেখানে কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলবে। তদন্তের পর যদি মনে হয় মামলায় যে বিষয়গুলো আছে সেগুলোর সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তাহলে আমরা আইনগত প্রক্রিয়ায় পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।
এদিকে সম্প্রতি মিল্টন সমাদ্দারের বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। মুখ খুলতে থাকেন ভুক্তভোগীরা।