দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত ৭

স্টাফ রিপোর্টার : পাবনার সুজানগর উপজেলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকেদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিনজনকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের কালিরমোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- ভায়না ইউনিয়নের ভায়না এলাকার রশিদ প্রামাণিকের ছেলে বাদশা প্রামাণিক (৪০), শেকেল শেখের ছেলে মতিন শেখ (৫০) ও মৃত আজগর আলীর ছেলে আব্দুল আওয়াল (৩৫)। আহত অন্যদের নাম পাওয়া যায়নি। তাৎক্ষণিকভাবে আটককৃতদের নামও পাওয়া যায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুজানগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল ওহাব (মোটরসাইকেল)। অন্যজন হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন (আনারস)।

বৃহস্পতিবার বিকেলে শাহীনুজ্জামান শাহীনের সমর্থকরা ভায়না কালির মোড়ে নির্বাচনী প্রচারণায় যান। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আব্দুল ওহাবের সমর্থক ও ভায়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিনের ভাতিজা আব্দুল আওয়ালকে কথা কাটাকাটির জেরে কিল-ঘুষি মারেন তারা। তখন চেয়ারম্যানের লোকজন শাহীন চেয়ারম্যানের লোকজনকে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর তারা আবার লোকজন নিয়ে ভায়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিনের বাড়ি ঘেরাও করেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুনঃ   হাসিনাকে দেশে এনে বিচার করা হবে: চিফ প্রসিকিউটর

খবর পেয়ে সেখানে হাজির হয় পুলিশ। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে শাহীন চেয়ারম্যানের লোকজনের কথা কাটাকাটি থেকে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতি হয়। পরে উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। এ সময় বাদশা নামের এক যুবক পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। অন্যরা ঘটনাস্থল থেকে সরে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে আহত বাদশাকে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত বাদশা চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনের সমর্থক বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে ভায়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিন বলেন, আমার বাড়ির ওপরে শাহীনুজ্জামান শাহীনের লোকজন হামলা করেছে। আমার বাড়ি ঘর ভাঙচুর করেছে। পরে পুলিশ এসে তাদের প্রতিরোধ করে। এখন তাদের লোকজন কীভাবে আহত হয়েছে পুলিশই ভালো বলতে পারবে।

আরও পড়ুনঃ   ছাত্র-জনতার উপর হামলা: বাগমারায় আ’লীগের ৯ নেতা গ্রেফতার

চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল ওহাব অভিযোগ করেন, প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনের লোকজন সারা উপজেলায় আমার লোকজনের ওপর হামলা চালাচ্ছে। বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্চে। আজকের ঘটনা তারই অংশ। তারা পুলিশকেও মানছে না।

তবে হামলার জন্য আমিন চেয়ারম্যানকে দায়ী করে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, ভোট নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে আমিন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আব্দুল মজিদ নামে আমার এক সমর্থককে মারধর করা হয়। এটা নিয়েই উত্তেজনা। পরে আমিন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আমার লোকজনের ওপর গুলি চালানো হয়। এতে আমার কয়েকজন সমর্থক গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সুজানগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, আমিন চেয়ারম্যানের বাড়ির ওপর হামলার খবর পেয়ে সেখানে গেলে শাহীনের লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শর্টগানের গুলি ছুড়লে একজনের পায়ে লাগে। ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে।