বাঘায় ইস্তিস্কার সালাত আদায় শেষে আল্লাহর নিকট বিশেষ প্রার্থনা

মোহাঃ আসলাম আলী স্টাফ রিপোর্টার : সারাদেশ ব্যাপী তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষা পেতে রাজশাহীর বাঘা পৌরসভার বানিয়াপাড়া ঈদগাহ মাঠে সালাতুল ইস্তিস্কা বা পানি প্রার্থনার সালাত আদায় শেষে আল্লাহর নিকট বিশেষ দোয়া প্রার্থনা করেন মুসল্লীগণ।
বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ০৯ টার দিকে বাঘা পৌরসভার বানিয়াপাড়া ঈদগাহ মাঠে খোলা আকাশের নিচে ইস্তিস্কার সালাত আদায় শেষে আল্লাহর নিকট বৃষ্টির আশায় বিশেষ ভাবে প্রার্থনা করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে নানা বয়সী মানুষ সালাতের জন্য মাঠে হাজির হন। নামাজের ইমাম প্রথমে মুসল্লিদের উদ্দেশে নিয়মকানুন বিষয়ে বয়ান করন। এরপর দুই রাকাত ইস্তিস্কার সালাত আদায় করেন। সালাত আদায় শেষে আল্লাহর দরবারে দুই হাত তুলে প্রচণ্ড রোদ্র-গরম,তীব্র তাপপ্রবাহ ও খরা থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টি চেয়ে মহান আল্লাহর নিকট বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
নামাজে উপস্থিত ছিলেন,বাঘা ইসলামী উচ্চবিদ্যালয় ও কারিগরী কলেজের প্রভাষক আমিনুল ইসলাম,উপজেলার জোতরাঘোব উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক নাসির উদ্দীন,আমোদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বানিয়াপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম,একই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফিরোজুর রহমান,ঈশ্বরদী চর মীকামারী আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম,খায়ের হাট উচ্চ বিদ্যালয়র শিক্ষক মোশাররফ হোসেন, বারোখাদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল খালেক,মনিগ্রাম দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক বেলাল হোসেন,বেরিলাবাড়ী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, বানিয়াপাড়া জামে মসজিদের ঈমাম শরীয়ত উল্লাহ,বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক রেজাউল করিম,আব্দুল খালেক,সমাজ সেসব আলহাজ্ব মহসিন আলী-সহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেনী পেশার অসংখ্য মুসল্লিগণ এ সালাতে অংশগ্রহন করেন।
নামাজে ইমামতি করেন মশিদপুর জামে মসজিদের ইমাম জোত-নোসি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাও:শিক্ষক সোহরাব সোসেন। এ সময় সংক্ষিপ্ত আলোচনায় তিনি বলেন,বৃষ্টি কামনা করে ইস্তস্কার নামাজের আয়োজন করা হয়। বৃষ্টি হলে দোয়া কবুল হয়েছে,বৃষ্টি না হলে দোয়া কবুল হয়নি এমনটি ভাবার সুযোগ নেই। আমরা যদি আল্লাহর কাছে ফিরতে পারি,তওবা করতে পারি,চাইতে পারি-তবেই আমাদের সফলতা ও সফলতা।
উল্লেখ্য,রাজশাহীতে গত ৪ এপ্রিল থেকে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। মৃদু,মাঝারি, তীব্র হয়ে অতি তীব্র পর্যন্ত উঠেছে তাপপ্রবাহ।গত ১৭ এপ্রিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০১৪ সালের ২১ মে একই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করলে তাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ ধরা হয়।
আর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪১ দশমিক ৯ পর্যন্ত থাকলে তা তীব্র তাপপ্রবাহ। সোমবার দুপুর ১২টায় রাজশাহীর তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহীতে সর্বশেষ গত ২ এপ্রিল ৬ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তারপর আর বৃষ্টির দেখা নেই। এখন তীব্র তাপদাহে পুড়ছে ফসলের মাঠ,ঝরে পড়ছে গাছের আম আর লিচু। তীব্র খরার কারণে চাপ কলে পানি না ওঠায় গরমের কারণে হাঁসফাঁস করছে প্রাণ। এই তাপদাহের ভেতর পানির জন্য কাহিল হয়ে পড়েছে জনজীবন। এ তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টি অনিবার্য হয়ে উঠেছে। বৃষ্টি নামলেই তাপদাহ কমবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস। তাই সবাই প্রত্যাশা করছেন একটু বৃষ্টির। বৃষ্টিপাত না হলে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (স.) সাহাবিদের নিয়ে খোলা আকাশের নীচে ইস্তিস্কার সালাত আদায় করতেন। সে জন্য তারা মহান আল্লাহর নিকট পাপের জন্য তওবা করে এবং ক্ষমা চেয়ে দুই রাকাত ইস্তিস্কার সালাত আদায় করে বৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহর নিকট বিশেষ প্রার্থনা করতেন।