অনলাইন ডেস্ক : ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে সামরিক ঘাঁটিতে রকেট হামলা চালিয়েছে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। দক্ষিণ লেবাননের গ্রাম লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলার জবাবে উত্তর ইসরায়েলের সেনা সদর দপ্তরে এই হামলা চালায় তারা।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর ইসরায়েলের একটি সেনা সদর দপ্তরে ‘কয়েক ডজন’ কাতিউশা রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে সোমবার জানিয়েছে হামাসের মিত্র হিজবুল্লাহ। দক্ষিণ লেবাননের বিভিন্ন গ্রাম লক্ষ্য করে ইসরায়েলের হামলার জবাবে এই হামলা চালানো হয়েছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তের উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বেড়েছে এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই আন্তঃসীমান্ত গুলি বিনিময় হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা সর্বকালের সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং এর মধ্যেই লেবাননের শিয়া এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি সীমান্তের ওপারে ইসরায়েলের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ আরও জোরদার করেছে।
হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ‘আইন জেইটিম ঘাঁটিতে ৯১ তম ডিভিশনের ৩য় পদাতিক ব্রিগেডের সদর দপ্তরে কয়েক ডজন কাতিউশা রকেট দিয়ে বোমাবর্ষণ করেছে’। অতি সম্প্রতি শ্রীফা, ওদাইসেহ এবং রাব তলাতিনে হামলাসহ লেবাননের ‘দক্ষিণাঞ্চলীয় নানা গ্রাম এবং বেসামরিক বাড়িঘরে’ ইসরায়েলি আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় এই হামলা চালানো হয়েছে।
লেবাননের সরকারি ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি (এনএনএ) সোমবার তিনটি গ্রামে ইসরায়েলি হামলার খবর দিয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, ‘লেবানন থেকে উত্তর ইসরায়েলের আইন জেইটিম এলাকায় নিক্ষেপ করা আনুমানিক ৩৫টি রকেট চিহ্নিত করা হয়েছে’ এবং কোনও আঘাতের খবর পাওয়া যায়নি।
তারা আরও বলেছে, ‘ইসরায়েলি সৈন্যরা রকেট নিক্ষেপের উৎস স্থানগুলোতে হামলা করেছে’।
মূলত গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েলের সংঘাত শুরুর পর থেকে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী নিয়মিতভাবেই সীমান্তে গুলিবিনিময় করছে। হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর এটিই ইসরায়েল-লেবানিজ সীমান্তে সবচেয়ে খারাপ সহিংসতার ঘটনা।
বার্তাসংস্থা এএফপির তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের এই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত লেবাননে কমপক্ষে ৩৭৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই হিজবুল্লাহ যোদ্ধা। এছাড়া নিহতদের মধ্যে ৭০ জন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।
অন্যদিকে হিজবুল্লাহর হামলায় ১০ ইসরায়েলি সৈন্য ও ৮ বেসামরিক নাগরিকসহ মোট ১৮ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।