দাবদাহে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, হাসপাতালে রোগীর চাপ

অনলাইন ডেস্ক : রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি ও তীব্র দাবদাহ। ফলে রোদ-গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। যার প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্যের ওপরও। এতে করে বাড়ছে জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া।

চিকিৎসকরা বলছেন, পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া। দূষিত পানি পান করার মাধ্যমে এ রোগ হয়। এ ছাড়া গরমের কারণে ডায়রিয়ার সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে। বিশেষ করে শিশু-কিশোররা এই রোগে বেশি ভুক্তভোগী হয়।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডগুলোতে রোগীর চাপ বেশি। যার ফলে বারান্দায়ও চিকিৎসা নিতে হচ্ছে অনেককে। একই চিত্র হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে। বহির্বিভাগেও শিশু ও মেডিসিন চিকিৎসকদের চেম্বারের সামনে রোগীদের দীর্ঘ সিরিয়াল দেখা গেছে।

রামেক হাসপাতালের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, গত ১৬ এপ্রিল হাসপাতালের আউটডোরে ১৯ জন, ইনডোরে ৩৮ জন এবং জরুরি বিভাগে ৭৮ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। যা বুধবার (১৭ এপ্রিল) আরও বেড়েছে। বুধবার ১২ বছরের কম বয়সী ২৪ জন শিশু ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হয়েছে। আর ১২ বছরের বেশি শিশু ভর্তি হয়েছে ১৪ জন। যা গতকাল বৃহস্পতিবার ১২ বছরের কম-বয়সী শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ জনে এবং ১২ বছরের বেশি বয়সী ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু ভর্তি আছে ১৫ জন।

আরও পড়ুনঃ   ফুটপাতে জমেছে নিম্ন-মধ্যবিত্তের ঈদবাজার

হাসপাতালের বহির্বিভাগে দেড় বছরের শিশুর চিকিৎসা নিতে আসা আফরোজা বেগম জানান, গত কয়েক দিন থেকে সর্দি, কাশি ও জ্বরে ভুগছে। এলাকার ফার্মেসি থেকে ওষুধ খাওয়ানো হলেও কোনো লাভ হয়নি। তাই তিনি হাসপাতালে এসেছেন।

আরও পড়ুনঃ   অক্সিজেনের পাইপ নিয়ে অটোরিকশা চালানো সেই সেন্টু মারা গেছেন

বিজ্ঞাপন

জরুরি বিভাগে শিশুকে ভর্তি করাতে নিয়ে আসা বাঘা উপজেলার বাসিন্দা নুরবানু বেগম জানান, দুই দিন আগে হঠাৎ করে শিশুর পাতলা পায়খানা হয়। এরপর পায়খানার দ্বার দিয়ে শুধু পানি নামতে থাকে। বাধ্য হয়ে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, আবহওয়াজনিত কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা রাখা হয়েছে।

রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, উপজেলা পর্যায়েও ডায়রিয়া রোগী আসছে। তবে মহামারি আকার ধারণ করেনি। আসলে মানুষ অস্বাস্থ্যকর খাবার বেশি খাচ্ছে। রাস্তার ধারের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রতি মানুষের সচেতনতা না বাড়লে ডায়রিয়া মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে যাবে। আমরা চিকিৎসার পাশাপাশি সচেতনতামূলক কার্যক্রমও চালাচ্ছি।