স্টাফ রিপোর্টার : আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিব রুবেলের সমর্থকেরা। ঘটনার পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ কর্মী দেলোয়ার হোসেন পাশাকে (৪৫) দেখতে ঢাকা থেকে সরকারি সফরে রাজশাহী এসেছেন পলক। আজ শুক্রবার সকালে বিমানে করে তিনি রাজশাহী আসেন।
দেলোয়ার হোসেন পাশা বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে দেখতে যাওয়া প্রতিমন্ত্রীর সফরসূচিতে বলা হয়, সকাল সাড়ে ৭টায় তিনি ঢাকা থেকে আকাশপথে রাজশাহী পৌঁছাবেন। এরপর হাসপাতালে দেলোয়ার হোসেনকে দেখেই তিনি আবার আকাশপথে দুপুরে ঢাকায় পৌঁছাবেন। সেখানে প্রতিমন্ত্রীর এই সফরকে সরকারি সফর হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নিয়ম অনুসারে তিনি এই সফরে সব ধরনের প্রটোকল পান।
রাষ্ট্রীয় কাজ ছাড়া শ্যালকের অপকর্মের জন্য সরকারি খরচে প্রতিমন্ত্রীর বিমানে যাতায়াত প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘আমি এসেছি ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য নিয়ে। কিন্তু আমাদের যে আইন ও নীতিমালা, সেখানে প্রতিমন্ত্রী দেশের ভেতরে যেখানেই যাবেন, তাঁকে যে প্রটোকল আছে, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সবাইকে অবহিত করতে হয়। ফলে এটাকে সরকারি সফর হিসেবেই দেখতে হবে। কারণ প্রতিমন্ত্রী যেখানেই যাবেন দেশের ভেতরে তাঁকে কিন্তু পুলিশ, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে আমাদের যাওয়ার ব্যাপারে বিধি-নিষেধ আছে। তো এটাকে আমি কীভাবে ব্যাখ্যা দেব? আমি এসেছি ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে, সাংগঠনিক কাজে। কিন্তু আমি যেহেতু সরকারের প্রতিনিধি, তাই এটা অবশ্যই সরকারি সফর।’
আগামী ৮ মে নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হবে। সেখানে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ও নাটোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিব রুবেল। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ ওঠার পর নির্বাচন কমিশন তাঁকে আগামী সোমবার তলব করেছে। এর আগে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন গত সোমবার জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে থেকে আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ কর্মী দেলোয়ার হোসেনকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় একদল লোক। নির্যাতনের পর বিকেলে একটি মাইক্রোবাসে তুলে তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর দেলোয়ারকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ওই রাতে তাঁকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়।
আজ শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেলোয়ারের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন প্রতিমন্ত্রী পলক। তখন দেলোয়ার হোসেন ঘুমাচ্ছিলেন। প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কোনো কথা হয়নি। সেখান থেকে বেরিয়ে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।