শক্তি হারাচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা : থাই প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক : সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে লাগাতার লড়াইয়ের জেরে ইতোমধ্যে যথেষ্ট শক্তি হারিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা। তবে এখনও উচ্ছেদ হওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছায়নি এই সরকার।

সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেত্থা থাভিসিন বলেন, ‘মিয়ানমারের বর্তমান সরকারে ইতোমধ্যে বেশ খানিকটা শক্তি হারিয়েছে; তবে এখনও তারা ক্ষমতায় রয়েছে এবং খুব শিগগির (তাদের) উচ্ছেদ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’

‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা আঞ্চলিক রাজনীতিতে মিয়ানমারের তৎপরতা প্রত্যাশা করছি। আশা করছি এবার আমরা (মিয়ানমারে) ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারব। আমার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা বলছে, এখনই (চুক্তিতে পৌঁছানোর) আদর্শ সময়।’

থাইল্যান্ড মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশ। দু’টি দেশই দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দশটি দেশের আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের সদস্য।

২০২০ সালের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এই অভুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, ক্ষমতা দখলের পর গঠিত সামরিক সরকারের প্রধানও হন তিনি।

আরও পড়ুনঃ   ভারতের বিমান মহড়ায় অংশ নিচ্ছে না বাংলাদেশ

অভ্যুত্থানের সময়েই বন্দি করা হয়েছিল অং সান সুচি, তার নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রী-এমপি এবং তার রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি’র (এনএলডি) হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে। সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি জনগণ প্রথম দিকে ব্যাপক আকারে বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু করেছিলেন, কিন্তু প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে সেসব বিক্ষোভ দমন করেছে সামরিক সরকার।

তবে তার পর থেকে গণতন্ত্রপন্থি জনগণের একটি অংশ যোগ দিতে শুরু করেন সামরিক বাহিনী বিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীতে। গত বছর অক্টোবর থেকে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী একযোগে হামলা শুরু করে সামরিক বাহিনীর ওপর। এখনও সেই সংঘাত চলছে এবং ইতোমধ্যে দেশটির প্রায় ১০ শতাংশ ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো।

আরও পড়ুনঃ   চাকরির লোভে ভারতে গিয়ে কিডনি হারালেন ৩ বাংলাদেশি

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এই সংঘাতের শেষ পরিণতি হবে মিয়ানমারের টুকরো টুকরো হওয়ার মধ্যে দিয়ে।

গত মাসে মিয়ানমারের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি সেমিনারের আয়োজন করেছিল থাইল্যান্ডের পার্লামেন্ট। সেই সেমিনার জান্তা বিরোধী জোট দ্য ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (নাগ) প্রতিনিধিরাও অংশ নিয়েছেন। এ ঘটনায় থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছে জান্তা।

‘মিয়ানমার আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। থাইল্যান্ড সবসময় মিয়ানমারকে ঐক্যবদ্ধ, শান্তিপূর্ণ এবং উন্নয়নের পথে অগ্রসর হতে দেখতে চায়,’ সংবাদ সম্মেলনে বলেন থাই প্রধানমন্ত্রী।