নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের নলডাঙ্গায় মুক্তিপন আদায়ের লক্ষ্যে হিমেল হোসেন (১৫) নামে এক স্কুল ছাত্রকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ৪জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দিনগত রাতে উপজেলার পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন ও পরিত্যক্ত ভবনের ভিতর এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হিমেল উপজেলার পিপরুল (সেন্টার) গ্রামের মো. ফারুক সরদারের ছেলে। সে পাটুল-হাপানিয়া স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র। এসময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ১টি ধারালো চাকু ১টি দা, রক্তমাখা গামছা, রশি এবং পলিথিন, আসামীদের ২টি স্মার্টফোন, ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল, দুরন্ত বাই-সাইকেল জব্দ করা হয়।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকালে পুলিশ সুপার কার্য্যলয়ে এক প্রেসব্রিফিং এ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এটি এম মাইনুল ইসলাম এতথ্য নিশ্চিত করেন। গ্রেফকারকৃতরা হলো, একই এলাকার পার্থ, মেহেদি সজুন ও শিমুল। এদের মধ্যে পার্থ ও মেহেদী নিহত হিমেলের সহপাঠি বলে জানা গেছে।
প্রেসব্রিফিং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এটি এম মাইনুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেল ৫টার দিকে পার্থ নামে সহপাঠি এক বন্ধু মোবাইল ফোনে হিমেলকে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন ও পরিত্যক্ত ভবনে ডেকে নেয়। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান তার স্বজনরা। পরে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুজি শুরু করেন।
কিন্তু কোথাও তার সন্ধান না পেয়ে পরে নিহত হিমেলের বাবা ওমর ফারুক থানা পুলিশকে জানান। এ অবস্থায় নিখোঁজ হিমেলকে উদ্ধারে অনুসন্ধানে নামেন পুলিশ। পরে মোবাইল ফোনের সুত্র ধরে নলডাঙ্গার হাঁপানিয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে শরিফুল ইসলাম সুজন (১৮) কে রাত ১১টার পরে তার নিজ বাড়ি হতে গ্রেফতার হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুজন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ও তার হেফাজত হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো চাকু উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে নিয়ে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন ও পরিত্যক্ত ভবনে রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় হিমেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয় এবং ঘটনায় জরিত থাকার অভিযোগে ওই রাতেই পিপরুল গ্রামের সজল সাহা পার্থ (১৮) সড়কুতিয়া (তালতলা বাজার) এর শিমুল ইসলাম (১৮), পাটুল পূর্বপাড়ার মেহেদী হাসান (১৭) কে গ্রেফতর করা হয়। ও তাদের ব্যবহৃত ২টি স্মার্ট ফোন হত্যাকান্ডে ব্যবহার করা আলামত উদ্ধার করা হয়।
এই হত্যাকান্ডের কারণ হিসাবে মূলত মুক্তিপন আদায়ের উদ্দেশ্যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ এমনটায় পেয়েছেন। ঘটনার সাথে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা। অপরদিকে হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এটি এম মাইনুল ইসলাম, পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কলিমুদ্দিনসহ আরো পুলিশ কর্মকর্তা।