স্টাফ রিপোর্টার : যথাযথ মর্যাদায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবন ও উপাচার্য ভবনসহ অন্যান্য ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
এদিন সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে শহীদ মিনারে ও সকাল ৯টায় বধ্যভূমি স্মৃতিফলকে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাড়াও হল প্রশাসন, বিভাগ, ইনস্টিটিউট, শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ, রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে এদিন সকাল ১০টায় শেখ রাসেল মডেল স্কুলে এবং সকাল সাড়ে ১০টায় রাবি স্কুলে স্বাধীনতা দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য এসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সকাল ১১টায় সাবাস বাংলাদেশ চত্বরে বিএনসিসি, রোভার স্কাউট ও রেঞ্জারের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।
এরপর বেলা সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় রাবির শহীদ পরিবার ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়। এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রশাসন অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. অবায়দুর রহমান প্রামানিক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাবি উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদি নেতৃত্বে এবং শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অকুতোভয় অবদানে আমাদের স্বাধীনতার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়। আত্মদানকারী এসব শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান জাতি কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অকুতোভয় অবদানে সম্ভব হয় আমাদের স্বাধীনতা অর্জন। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির মনে স্বাধীনতার যে আকাঙ্খা ও চেতনার সৃষ্টি করেছিলেন তাতেই উজ্জীবিত হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে জাতি গর্বিত।
অনুষ্ঠানের সভাপতি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানে স্বাধীন হয়েছি আমরা। তাদের অবদানেই অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা। স্বাধীনতার চেতনা উজ্জীবিত রাখা আমাদের বর্তমান প্রজন্মের দায়িত্ব। সে লক্ষ্যে সকলকে সচেতন হতে হবে বলেও উপ-উপাচার্য উল্লেখ করেন।
দিবসটির দিনব্যাপী সকল আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্যদ্বয় ও কোষাধ্যক্ষ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক তারিকুল হাসান, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, অনুষদ অধিকর্তা, হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রশাসনের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া দিবসটির আয়োজনে আরও ছিলো বাদ আসর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ প্রর্থনা।
এর আগে, গতকাল ২৫ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের প্রাক্কালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে উপাচার্যসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করেন। এছাড়া সরকার নির্ধারিত সময়ে ১ মিনিট ব্ল্যাক আউটও করা হয়।