নিপুণের সভাপতি কে এই মাহমুদ কলি

অনলাইন ডেস্ক : নানা গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নিজ প্যানেলের সভাপতির নাম ঘোষণা করেছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। তার প্যানেলে সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের জনপ্রিয় অভিনেতা মাহমুদ কলি।

রোববার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় এফডিসিতে সংবাদ সম্মেলনে অভিনেত্রী নিজেই সভাপতির নাম ঘোষণা করেন। এ সময় নিপুণের পাশে ছিলেন অভিনেতা মাহমুদ কলি। নির্বাচনে দাঁড়িয়ে ভোটারদের কাছে সমর্থন প্রত্যাশা করেছেন তিনি।

মাহমুদ কলি জানান, বর্তমানে ব্যবসা নিয়েই দিন কাটে তার। পারিবারিকভাবেই ব্যবসা ছিল তাদের। সেই ব্যবসার সঙ্গে নিজস্ব ব্যবসা যোগ করে এখন পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী তিনি। তবে মাঝে মধ্যে ভক্তদের সঙ্গে দেখা যে সম্মান তিনি পান তাতে ভীষণ ভালো আনন্দিত হন তিনি।

তিনি বলেন, এটা পৃথিবীর নিয়ম যে আমরা আসব, কিছুদিন থাকব, একদিন চলে যাব। এ জন্য একে অপরকে জায়গা দিতে হয়। আমি চলচ্চিত্রে ছিলাম। হয়তো আমি একটু আগেই চলে এসেছি। আমি যত দিন ছিলাম, সুখী ছিলাম। যতটুকু করার ছিল, করেছি। চলচ্চিত্র শিল্পের মানুষের উপকার করার, দর্শকদের আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি সন্তুষ্ট। পৃথিবীতে যে কটা দিন থাকা যায়, মানুষের উপকার করে, নিজের পরিবার, আশপাশের সবার জন্য যদি কাজ করা যায়, তবে ভালো। আমার জীবনে চাহিদা ছিল অল্প। যতটুক পেয়েছি, তাতে আমি সুখী।

আরও পড়ুনঃ   ‘সত্যকে লুকিয়ে রাখা সম্ভব না’, কাকে ইঙ্গিত দিলেন অপু বিশ্বাস?

কে এই মাহমুদ কলি? আশি ও নব্বই দশকের নায়ক মাহমুদ কলি। দীর্ঘদিন তিনি রূপালী পর্দায় দর্শক মাতিয়েছেন। তার পারিবারিক নাম মাহমুদুর রহমান উসমানী। তিনি বাংলাদেশের স্বনামধন্য চিত্রনির্মাতা আজিজুর রহমান বুলি’র ছোট ভাই। মূলত ভাইয়ের হাত ধরেই তিনি চলচ্চিত্রে আসেন। এরপর দেখিয়েছেন অভিনয়ের মুন্সিয়ানা।

মাহমুদ কলি’র প্রথম চলচ্চিত্র ‘মাস্তান’। তিনি এই চলচ্চিত্রে সহ-অভিনেতার ভূমিকায় ছিলেন। এরপর ১৯৭৮ সালে অশোক ঘোষ নির্মিত ‘তুফান’ চলচ্চিত্রে মূল নায়কের ভুমিকায় অভিনয় করেন। মাহমুদ কলি ৬১টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তারমধ্যে ২টি সিনেমা মুক্তির মুখ দেখেনি। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘লাভ ইন সিঙ্গাপুর’, ‘গোলমাল’, ‘নেপালি মেয়ে’, ‘শ্বশুরবাড়ি’, ‘সুপারস্টার’, ‘গ্রেফতার’, ‘খামোশ’, ‘মহান’, ‘দেশ বিদেশ’, ‘মা বাপ’ ইত্যাদি।

১৯৯৪ সালে নায়ক হিসেবে মাহমুদ কলি অভিনীত সর্বশেষ মুক্তি পায়। এর নাম ছিলো ‘মহাগ্যাঞ্জাম’। তবে ২০০২ সালে তাকে আবারও দেখা গিয়েছিলো ‘আবার একটি যুদ্ধ’ চলচ্চিত্রে। সেখানে তিনি উকিল চরিত্রে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন।

আরও পড়ুনঃ   জাহ্নবীকে যে কাজটি না করতে কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন শ্রীদেবী

অভিনয়ের পাশাপাশি দীর্ঘদিন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতৃত্বের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে তিনি সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তার সঙ্গে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন খল অভিনেতা আহমেদ শরীফ। এরপর তিনি একই প্যানেল থেকে নির্বাচিত হয়ে ১৯৯৫-১৯৯৭ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তবে এর পরের বছরে তিনি অভিনেতা মিজু আহমেদকে নিয়ে নতুন প্যানেলে সভাপতি পদে প্রার্থি হন এবং নির্বাচিত হন। ৯৭ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

১৯৯৭ সালে তিনি টিভি নাটক নির্মাণেও নাম লেখান। ‘তাদের কথা’ নামি ছিলো তার প্রথম নাটকের। এরপর তিনি ‘আলোকিত আঙ্গিনা’ নামে আরও একটি ধারাবাহিক নাটক নির্মান করেন।

উল্লেখ্য, আগামী ২৭ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মিশা সওদাগর ও মনোয়ার হোসেন ডিপজল এক প্যানেল থেকে নির্বাচন করবেন। অপর প্যানেলে তাদের বিরুদ্ধে লড়বেন চিত্রনায়িকা নিপুণ ও মাহমুদ কলি।