অনলাইন ডেস্ক : ১৯৬৯ সালে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে আফ্রিকায় যায় ব্রাজিলিয়ান ক্লাব সান্তোস। সেই সময় ক্লাবটির হয়ে খেলতেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার পেলে। যখন ম্যাচটি আয়োজন করা হয় তখন আফ্রিকায় পুরোদমে চলছিল গৃহযুদ্ধ। তবে এই ব্রাজিলিয়ান তারকাকে এক নজর দেখতে ৪৮ ঘণ্টা যুদ্ধ বিরতি দেয় যোদ্ধারা। চলমান গাজা-ইসরাইল যুদ্ধেও ঘটেছে তেমনই একটি ঘটনা। তবে এবার যুদ্ধ বন্ধ না হলেও আর্জেন্টাইন বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসির দেশের নাগরিক হওয়ায় মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাসের সৈন্যদের দ্বারা অপহরণের শিকার হওয়ার পরও প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন এক ইহুদি বৃদ্ধা।
ঘটনাটি গেল বছর অক্টোবর মাসের, গাজায় তখন পুরোদমে চলছিল ইসরাইল এবং হামাসের যুদ্ধ। সে সময় ইসরাইলের সৈন্যরা নির্মমভাবে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছিল সাধারণ গাজার নাগরিকদের ওপর। সেখানে ফুটবল এবং প্রিয় ফুটবলারের প্রতি ভালোবাসার অন্যরকম প্রতিদান দেন হামাসের এক সৈন্য। গত বছর অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে হঠাৎ করেই ইসরাইলের কিব্বুতজ শহরে হামলা চালায় হামাস। সেখানে তাদের অপহরণের শিকার হন ইস্টার কুনিও নামে এক বৃদ্ধা মহিলা এবং তার পরিবার। তবে একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুরো বিষয়টি মোড় নেয় ভিন্ন দিকে, অপহরণ থেকে বেঁচে যান ৯০ বছর বয়সী ইস্টার। যদিও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় গাজায়।
সম্প্রতি হামাসের অপহরণের হাত থেকে বেঁচে যাওয়ার বিবরণ জানিয়ে এক সাক্ষাৎকারে ইস্টার বলেন, ‘প্রথম দিকে আমি তাকে (হামাসের যোদ্ধা) আমার সঙ্গে কথা না বলতে বলেছি। কারণ আমি তার ভাষা বুঝতে পারি না। সে আরব ভাষায় কথা বলছিল এবং আমি আর্জেন্টিনার, তাই আমি স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলি। এরপর আস্তে আস্তে আমি তার ভাষা কিছুটা বুঝতে পারি। তখন আমি তাকে বলি, আপনি ফুটবল দেখেন? তখন তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমি ফুটবল পছন্দ করি। সে সময় আমি তাকে বলি, আমি মেসির দেশ আর্জেন্টিনা থেকে এসেছি। তখন তিনি আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলেন কিছুক্ষণ এবং তিনি আমাকে বলেন, আমি মেসিকে ভালোবাসি। তিনি তখন আমার কাঁধে তার হাত রাখলেন এবং আমার হাতে তার বন্দুক দিয়ে দেন। এরপর আমাকে শান্তির চিহ্ন দেখাতে বলে এবং আমার সঙ্গে ছবি তোলে।’
এছাড়াও সেই বৃদ্ধা মহিলা সেই ভিডিও বার্তায় জানান, হামাসের কাছে তার দুই নাতি-নাতনি এখনও বন্দি আছেন, তাদের নাম ডেভিড এবং এরিয়েল। এ সময় তিনি আর্জেন্টাইন সুপার স্টারের কাছে অনুরোধ জানান, তাদের উদ্ধার করার জন্য। বলেন, ‘যদি মেসি জানে যে আমি তার নাম বলে রক্ষা পেয়েছি, তবে বলব আমার নাতি-নাতনিরা সেখানে আটকে রয়েছে। তাদেরকেও ঈশ্বর মুক্তি দিন। তারা আমার কাছে সোনার মতো মূল্যবান।’