অনলাইন ডেস্ক : চার দিনের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (০৩ মার্চ) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী বুধবার (৬ মার্চ) সম্মেলন শেষ হবে।
এবারের সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে থাকছে ৩৫৬ প্রস্তাব। প্রস্তাবগুলোর জনসেবা বৃদ্ধি, জনদুর্ভোগ হ্রাস করা, রাস্তাঘাট ও ব্রিজ নির্মাণ, পর্যটনেন বিকাশ, আইন- কানুন বা বিধিমালা সংশোধন, জনস্বার্থ সংক্ষণের বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয়েছে।
এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২২টি প্রস্তাব পড়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে। গত বছরও একইভাবে ডিসিরা প্রায় আড়াইশ প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন।
সম্মেলনে সর্বমোট অধিবেশন ৩০টি। এর মধ্যে কার্য-অধিবেশন ২৫টি (১টি উদ্বোধন অনুষ্ঠান, ১টি স্পীকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং মতবিনিময় এবং ১টি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং সদয় নির্দেশনা গ্রহণ এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানিকতা ২টি। এছাড়া অংশগ্রহণকারী কার্যালয়: ১টি (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়)।
এবারের ডিসি সম্মেলনে প্রথমবারের মতো সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিবরা বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের কাছে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। এজন্য সম্মেলনের প্রথম দিন (রোববার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘উন্নয়নে মাঠ প্রশাসন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিবরা।
কার্য-অধিবেশন
সম্মেলনের কার্য-অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। প্রতিটি অধিবেশন হবে মন্ত্রণালয় ভিত্তিক। সেখানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত অধিবেশনের মাধ্যমে মূল অধিবেশন শুরু হবে, যা দ্বিতীয় অধিবেশন হিসেবে গণ্য হবে। তৃতীয় অধিবেশনে থাকবে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত। চতুর্থ অধিবেশনে থাকবে সমাজকল্যাণ, যুব ও ক্রীড়া এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নিয়ে। পঞ্চম অধিবেশনে থাকবে ‘উন্নয়নে মাঠ প্রশাসন’ শীর্ষক আলোচনা।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে মোট ৮টি কার্য অধিবেশন রয়েছে। প্রথম অধিবেশন শুরু হবে সকাল ৯টায়। এ অধিবেশনে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, ধর্ম, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে অর্থ মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বিষয়ে। তৃতীয় অধিবেশন খাদ্য, মৎস্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত।
চতুর্থ অধিবেশনে থাকবে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রসঙ্গ। এ দিনের পঞ্চম অধিবেশনের আলোচ্যসূচিতে রয়েছে সড়ক পরিবহন, সেতু বিভাগ ও রেলপথ মন্ত্রণালয় ইস্যু। ষষ্ঠ অধিবেশনের বিষয়সূচিতে রয়েছে নৌপরিবহন, পানি সম্পদ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় প্রসঙ্গ।
তবে বৈচিত্র্য রয়েছে সপ্তম অধিবেশনে। এই অধিবেশন সাজানো হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন বিষয়ে। দ্বিতীয় দিনের একেবারে শেষ অধিবেশন সাজানো হয়েছে বস্ত্র ও পাট এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ইস্যু নিয়ে। এ দিনের সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবনে স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও নৈশভোজে অংশ নেবেন জেলা প্রশাসকরা।
তৃতীয় দিনে অধিবেশন রয়েছে সাতটি। প্রথম অধিবেশনটি হবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সশস্ত্র বাহিনীর বিভাগ নিয়ে। দ্বিতীয় অধিবেশনে থাকবে দুটি মন্ত্রণালয়। একটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ও অন্যটি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। তৃতীয় অধিবেশন চারটি মন্ত্রণালয় নিয়ে। এগুলো হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। চতুর্থ অধিবেশনটি হবে শুধু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত। পঞ্চম অধিবেশনের বিষয়সূচিতে রয়েছে পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। ষষ্ঠ অধিবেশনে থাকবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ। এ দিনের সর্বশেষ অধিবেশন হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত।
বুধবার অর্থাৎ শেষদিনে রয়েছে মোট পাঁচটি অধিবেশন। প্রথম অধিবেশন দুটি ভূমি এবং আইন মন্ত্রণালয় নিয়ে। দ্বিতীয় অধিবেশনে রয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় প্রসঙ্গ। এ দিনের তৃতীয় অধিবেশনের বিষয়সূচিতে রয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এছাড়া অধিবেশনে থাকবে ফিডব্যাক ও সম্মেলনের মূল্যায়ন। মূলত এটি সমাপনী অধিবেশন। এ অধিবেশন শেষে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও আপ্যায়ন পর্ব রয়েছে ডিসিদের।
শেষদিনের সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভা অনুষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে শেষ হবে এবারের ডিসি সম্মেলন।